সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় শ্রেষ্ট একজন শিক্ষিকার ৪১ বছরের চাকুরী জীবন হতে অবসরে যাওয়ার শেষ কার্যদিবসে বিদায় সংবর্ধনা ও সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের উত্তর চান্দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রছাত্রীদের আয়োজনে স্কুল প্রাঙ্গনে প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষিকা লিপিকা দস্তিদারকে বিদায় সংবর্ধনা উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জগত মোহন বর্মণের সভাপতিত্বে ও উপজেলা তথ্য কর্মকর্তা পারমিতা দাস সুইটির সঞ্চালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন করিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিটন চন্দ্র দাস। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন,দিরাই জনস্বাস্থ্য বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী উজ্জল খান,সুনামগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ও মোহনা টেলিভিশনের প্রতিনিধি কুলেন্দু শেখর তালুকদার,উপজেলা প্রাণী সম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ইহতেশামুল হক আবির,উপজেলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি রতি রঞ্জন দাস লিটন,সংবর্ধিত অতিথি লিপিকা দস্তিদার,শিক্ষানুরাগী অমলেন্দু বর্মণ, বিনয় ভূষন দাস,রঞ্জিত কুমার দাস,প্রধান শিক্ষক মিলন বালা রায় ও শিল্প বর্মণ প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে করিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিটন চন্দ্র দাস বলেছেন,শিক্ষকরা জাতির শ্রেষ্ট সন্তান। একজন মা যেমন একটি সন্তান জন্ম দিতে পারেন কিন্তু একজন শিক্ষক তার মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে ঐ সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলেন। পরবর্তীতে ঐ সমস্ত সুসন্তানরা দেশ ও জাতির কল্যাণে অবদান রেখে যাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন,এই উপজেলায় শ্রেষ্ট শিক্ষক হিসেবে লিপিকা দস্তিদার ৪১ বছরের শিক্ষকতা জীবনে তিনি বেশ খ্যাতি অর্জন করেছেন। তার চাকুরীর মেয়াদ শেষ হওয়াতে তিনি বাধ্যতা মূলক অবসরে যাবেন এটাই স্বাভাবিক । কিন্তু তার শিক্ষক জীবনের কর্মকান্ড ও অবদানগুলো দিরাইবাসী আজীবন মনে রাখবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পরে উত্তর চান্দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্ডলী ও ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ থেকে সংবর্ধিত বিদায়ী অতিথি লিপিকা দস্তিদারের হাতে সম্মাননা ক্রেষ্ট তুলে দেন অতিথিরা। পরে তার সম্মানে একটি কেক কেটে খাওয়ানো হয়। বিদায়ী সংবর্ধিত অতিথি শিক্ষিকা লিপিকা দস্তিদার তার কর্মময় জীবনের ৪১ বছরের শিক্ষকতা জীবনের স্মৃতিচারণ করে বলেন,আমি যে বিদ্যালয়ে যতদিন চাকুরী করেছি ঐ বিদ্যালয়ের প্রতিটি ছাত্রছাত্রীকে আমার সন্তানের মতো মনে করে শিক্ষা দিয়েছি। আমি অবসরে যাওয়ার পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত দিরাই উত্তর চান্দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে গেছি। পরে উপস্থিত বিদ্যালয়ের কোমলমুতি শিক্ষার্থীদের জড়িয়ে ধরে আবেগ আপ্লত হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন শিক্ষিকা লিপিকা দস্তিদার ।
Commentbox